
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম-এর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে টিএমএসএস বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। সংস্থাটি বিগত ১৬/০৩/১৯৯১ তারিখে পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থা হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই সংস্থাটি গ্রামের অবহেলিত, নিগৃহীত, নিঃস্ব, অতিদরিদ্রদের ভাগ্যোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। টিএমএসএস প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালনসহ বিগত বিগত প্রায় ৩৪ বছর যাবত অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম সংস্থাটির প্রধান নির্বাহী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সার্বিকভাবে টিএমএসএস-এর কর্মপ্রবাহ এবং মূল্যবোধ সৃষ্টিতে অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম-এর অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি একুশের অধিক স্বর্ণপদক ও রৌপ্যপদক অর্জন করেছেন।
টিএমএসএস-এর সাফল্য এবং তাতে অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম-এর নেতৃত্বের ভূমিকা বাংলাদেশের তরুণ উন্নয়ন কর্মীদের জন্য ভীষণ অনুপ্রেরণামূলক। ‘পিকেএসএফ পরিক্রমা’র জন্য অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম-এর সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন মোহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন শেখ, সহকারী মহাব্যবস্থাপক, পিকেএসএফ।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: টিএমএসএস আপনার নেতৃত্বে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে একটি অনন্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে, আপনি টিএমএসএস-এর সাথে কখন কীভাবে সম্পৃক্ত হলেন?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে আমি সম্পৃক্ত হই। ঠেঙ্গামারা হচ্ছে বগুড়া সদরের নিকটবর্তী প্রত্যন্ত গ্রাম। এই গ্রামের কিছু দরিদ্র নারী অনেক আগে মুষ্টির চাল তুলে নিজেরাই কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছিল। কিন্তু তারা নিজেদেরকে দাড় করাতে পারেনি। আমি যেহেতু ছোট বেলা থেকেই গ্রামের এলাকায় বিভিন্ন মানুষের প্রয়োজনে সহায়তা দিতাম, সেহেতু সেই সময়ের দরিদ্র অসংগঠিত নারীদের ভাল উদ্যোগটাকে আমি বিস্তৃত পরিসরে কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছি।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে টিএমএসএস মাঠপর্যায়ে কি কি কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: দারিদ্র বিমোচনের জন্য মূলত দরকার সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণের সক্ষমতা অর্জন করা। সে সময়ের আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ছিল পরিবার পরিকল্পনা। আমরা টিএমএসএস থেকে প্রথমেই স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাকে প্রাধান্য দিয়েছি। তারপর শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা আমাদের ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের জন্য একটি সমন্বিত মডেল করেছি; যার নাম দেয়া হয়েছে Health, Education & Microfinance সংক্ষেপে HEM Model । স্বাস্থ্য খাতে আমরা ১৩০টি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেবাকেন্দ্র, ০৪টি সাধারণ হাসপাতাল, ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট রফাতুল্লাহ কমিউনিটি হাসপাতাল, ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট ক্যানসার কেয়ার সেন্টার, হার্ট সেন্টার, বায়োমলিকিউ ল্যাব স্থাপন করেছি। আমাদের আছে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজসহ ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। আমরা PKSF–এর সহায়তায় ক্ষুদ্রঋণ কর্যক্রম সম্প্রসারণ করেছি। বর্তমানে দেশব্যাপী ৯৬৫টি শাখার মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ ও সামাজিক উন্নয়ন কার্যক্রম চলমান আছে।
কৃষির আধুনিকায়ন, জলবায়ু, পরিবেশ ও তথ্য প্রযুক্তি, প্রশিক্ষিত জনবল বিদেশে প্রেরণ, মৎস্য সেক্টরের আধুনিকায়ন, প্রাণিসম্পদ, সামাজিক বনায়ন, মানবাধিকার ও জেন্ডার, অ্যাগ্রো ফার্ম, লেবার কন্ট্রাকটিং সোসাইটি, বিনোদন জগৎ, ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্যক্রম ছাড়াও টিএমএসএস-এর কিছু সামাজিক ব্যবসা কর্যক্রম আছে। যেমন: বিল্ডিং কনস্ট্রাকশন লিমিটেড, পেপার মিল, বোর্ড মিল, সিরামিক ইন্ডাস্ট্রিজ, গ্লাস মিল, টিএমএসএস এলপিজি প্রভৃতি।
মানবিক কর্মসূচির আওতায় গড়ে তোলা হয়েছে টিএমএসএস রিলিজিয়াস কমপ্লেক্স। এখানে প্রবীণ নিবাস, অটিজম সেন্টার, এতিমখানা, দরিদ্রদের বিনামূল্যে খাবার সরবরাহের জন্য খাবার ঘর, প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম বাস্তবায়নে আপনারা কি ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে এবং তা অতিক্রম করেছেন কীভাবে?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রথমত সামাজিক সংস্কার, ধর্মীয় অন্ধতা, নারীর অনগ্রসরতা, পর্দা প্রথার কড়াকড়ি প্রভৃতি চ্যালেঞ্জ আমাদেরকে মোকাবেলা করতে হয়েছে। ধীরে ধীরে আমরা সমাজের প্রতিটি স্তরের জনসমষ্টিকে বুঝানোর চেষ্টা করেছি, তাদের সহায়তা চেয়েছি তাদের নিকট বারবার গিয়েছি, নিজেরা নত হয়েছি। পরিবারের কন্যা শিশুদের পড়ালেখা নিশ্চিত করার বিষয়টি প্রাধান্য দিয়েছি। পরিবারের নারীদেরকে আয়ের সাথে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করে এগিয়ে এসেছি।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: আপনি প্রায় ৩৪ বছর পূর্বে টিএমএসএস-এ কাজ শুরু করেছেন। এ ধরনের একটি উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করার বিষয়ে কি অনুপ্রেরণা ছিল আপনার?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: প্রথমত আমার শারীরিক একটা পরিবর্তন হয়েছে। এই পরিবর্তন জনিত কারণে এক সময় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে উপনীত হয়েছিলাম। এ সময় শপথ করেছিলাম যদি বেঁচে থাকি তাহলে আমার সারাজীবন আমি সমাজের পিছিয়ে পড়া, পিছিয়ে থাকা মানুষের জন্য উৎসর্গ করবো। এটাই আমার প্রেরণা।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: আপা, আপনার ব্যক্তিগত জীবন থেকে দুই/একটি প্রশ্ন করতে চাই। ১৯৭৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারিখটা সম্ভবত আপনার জীবনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। হাসপাতালের বেডে শুয়ে অপারেশন থিয়েটারে যেতে যেতে আপনি বাকী জীবনটা জনসেবায় ব্যয় করার প্রতিজ্ঞা করলেন; আপনার সেই মুহূর্তের কথা এখন কীভাবে মনে পড়ে?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: এখনও মনে পড়ে। আমিও সেটা ভুলতে চাই না, ভুলে গেলে আমার শপথ ভঙ্গ হবে। জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে যখন এসেছিলাম তখন মনে হতো মৃত্যুইতো ভালো, মৃত্যুর পর পূর্ব পুরুষদের সাথে দেখা হবে, বেহেশত দেখবো, প্রভৃতি একরকম নেশার মত ছিল।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: ১৪ ডিসেম্বর ১৯৭৫-এর বিকেলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের লতিফ হলের ছাত্র, যে আব্দুস সামাদকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলো, তিনি ৬/৭ মাস পরে হাসপাতাল থেকে যখন ছাড়পত্র পেলেন তখন তার নাম হোসনে-আরা বেগম; যার বাংলা অর্থ ‘প্রদীপ্ত নারী’। আপনার জন্য এই নতুন নামটি কে নির্ধারণ করেছিলেন, সে সম্পর্কে কিছু বলুন।
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: আমার বড় ভাই মাওলানা আব্দুর রহমান পীর সাহেব আমার নাম রেখেছিলেন। প্রথমত উনিসহ অন্য সকলেই ধরে নিয়ে ছিলেন আমি বাঁচবো না। আমার জন্য কফিন তৈরি করে রাখা হয়েছিল। তবে নামটি আমার ভাই আগেই ঠিক করেছিলেন যদি আমি বেঁচে যাই তাহলে আমার নাম হবে হোসনে-আরা বেগম।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: ম্যাডাম, এবার আমরা আবার আপনার কর্মজীবনের প্রসঙ্গে ফিরে আসি। টিএমএসএস ১৯৯১ সাল থেকে পিকেএসএফ-এর সহযোগী সংস্থা হিসেবে কাজ করছে। পিকেএসএফ-এর নিকট থেকে আপনারা কি ধরনের সহযোগিতা পেয়ে থাকেন?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: আমরা পিকেএসএফ–এর প্রতি ভীষণভাবে কৃতজ্ঞ। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের জন্য পিকেএসএফ হেন কাজ নাই যা করে নাই। আমার মনে আছে আমরা যখন বিভিন্নভাবে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছিলাম তখন PKSF বিভিন্ন জেলার DC, UNO-দের Request Letter দিয়েছে আমাদেরকে সহায়তা করার জন্য।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: শুধু মাঠপর্যায়ের কার্যক্রম নয়; সংস্থার মজবুত প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ ও দক্ষ জনবল সৃষ্টি ইত্যাদি ক্ষেত্রেও টিএমএসএস-এর সাফল্য উল্লেখযোগ্য। এসব ক্ষেত্রে উন্নতি অর্জনে পিকেএসএফ থেকে কি ধরনের সহযোগিতা পেয়েছেন?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: PKSF আমাদেরকে বলতে পারেন একদম হাতে কলমে কাজ শিখিয়েছে। দেশবিদেশে কর্মী প্রশিক্ষণ, On Job Training, বিভিন্ন ডকুমেন্টস তৈরি ও সংরক্ষণ, হিসাব ব্যবস্থাপনা, এমনকি PKSF–এর প্রায় সকল ঊর্ধ্বতনগণ আমাদের ফাউন্ডেশন অফিস বগুড়ায় গিয়ে কৌশলগত পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সেটা বাস্তবায়নের জন্য Action Plan-সহ বিভিন্ন সহায়তা দিয়েছে।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: এনজিও কর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের সুদ বা সার্ভিস চার্জের হার বেশী, -এ ধরনের একটি সমালোচনা সমাজে প্রচলিত রয়েছে। এ বিষয়ে আপনার মত কি?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: সমালোচকরা NGO কর্তৃক বিতরণকৃত ঋণের প্রকৃতি, ঋণ গ্রহীতাদের অনুকূলে অবিরত সহায়তা দেয়া, বাড়ি বাড়ি এমনকি ডোর টু ডোর সেবা দেয়া, Training, Protection, Counselling-সহ নানা প্রকার কাজ করতে হয়। এ বিষয়ে মূলত সঠিক ও সম্পূর্ণ ধারণা না থাকায় তারা এমন সমালোচনা করে থাকেন।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: আপনি তো দীর্ঘদিন মাঠ পর্যায়ের মানুষের সাথে কাজ করছেন, কোন বিশেষ স্মৃতি বা ঘটনা মনে পড়ে, যা আপনাকে আলোড়িত করেছে?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: আসলে দীর্ঘ বছরের পথ চলায় অনেক ও অসংখ্য ঘটনা আছে। যেমন: আমাদের সদস্য হওয়ার আগে নারীদেরকে তাদের স্বামীরা কখনো কখনো মারধর করতো, নারীদের প্রতি সেরকম কোন যত্ন-আত্তি ছিল না, খেয়াল করতো না, অবহেলার জায়গায় ছিল। আমাদের নিকট হতে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার সহায়তা নিয়ে যখন তারা আয় করা শুরু করলো, তারপর স্বামীদের অবস্থান পাল্টাতে থাকে। ক্রমশঃ নারীদের মুখ হাস্যোজ্জ্বল হতে থাকে। এদের হাসিতে আমার প্রাণ জুড়িয়ে যেতো এবং এখনও যায়। এই যে অবহেলিত নারীদের হাস্যোজ্জ্বল মুখ দেখা, এটা আমাকে ভীষণভাবে আলোড়িত করে।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: টিএমএসএস-এ বিগত ৩৪ বছরের কর্ম জীবনে আপনার কি কোনো অপূর্ণতা আছে? এমন কিছু কি আছে যা করতে চেয়েছিলেন; কিন্তু পারেন নাই? বা যেভাবে চেয়েছিলেন ঠিক সেভাবে হয় নাই?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: আমাদের সংস্থায় আমার অন্যতম প্রধান একটি ইচ্ছে ছিল সম্পূর্ণ Faith based administration প্রতিষ্ঠা করবো। কোন হাজিরা খাতা থাকবে না, সময়ের বেরিয়ার থাকবে না, সবার স্বাধীনতা থাকবে, যার যার মত কাজ করবে। আমি চেয়েছিলাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে Values, Human Rights, Equality, ন্যায্যতা, সততা প্রতিষ্ঠিত হবে। আমি মনে করি এর ৫০%–ই হয়ত অর্জন করতে পারিনি। এটাই আমার অসম্পূর্ণতা।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: টিএমএসএস-এর আগামী দিনের পরিকল্পনা সম্পর্কে কিছু বলুন।
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: মূলত আমার চাওয়ার অপূর্ণতাগুলোকে পূর্ণতা আনতে যা যা করা দরকার আমি তাই করতে চাই। তাছাড়া দেশের প্রতিটি জেলায় কোয়ালিটি কভারেজ নিশ্চিত করতে চাই।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: আপনার প্রতিষ্ঠানসহ বাংলাদেশের ক্ষুদ্রঋণ সেক্টরের উন্নয়ন কর্মীদের জন্য আপনার কি পরামর্শ আছে?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: NGO-তে কর্মরত উন্নয়ন কর্মীরা লাভের জন্য পরিচালিত বা কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান বা সংস্থায় পরিচালিত জনবলদের সমকক্ষ ও সম মর্যাদায় বিশেষ করে সমভোগের প্রত্যাশায় চলতে চায়। ফলশ্রুতিতে লাভের জন্য ঐ সমস্ত প্রতিষ্ঠানের জনবলদের সহিত বিশেষ ও প্রতিযোগিতার পাল্লায় পড়তে হয়। NGO কর্মীদের ভোগ, চলনবলন, আচার-আচরণ যদি Pro-Poor এবং সেবামূলক প্রাধান্য থাকতো NGO-দের প্রতি মানুষের ভক্তি, স্বীকৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়তো। ফলে NGO কর্মীদের সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেতো। এজন্য NGO কর্মীদের বিশেষত্ব থাকা দরকার।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: আপা, আমাদের আলাপচারিতা শেষ পর্যায়ে। একটা ভিন্ন ধরনের প্রশ্ন আপনাকে করতে চাই। এই প্রশ্নের উত্তর আপনি ছাড়া আর কে দিতে পারবে আমার জানা নেই। আপনি স্বয়ং মহান স্রষ্টার এক অপূর্ব নিদর্শন। মানুষ হিসেবে আপনি এক জীবনে পুরুষের দৃষ্টিতে নারীকে দেখেছেন; আবার নারীর দৃষ্টিতে পুরুষকে দেখেছেন। এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে কোনো তুলনা কি আপনি অনুভব করেন?
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: অবশ্যই অনুভব করি। বঞ্চনা যুক্ত নারীদের হৃদয়ের প্রশস্ততা ও সাহস পুরুষ অপেক্ষা কম। যদিও মহিলারা কষ্ট সহিষ্ণু, কৃচ্ছ্র সাধন বেশি করে সংসারের ভিত্তিমূল হিসেবে ভূমিকা রাখে। তবুও পুরুষরা নারীকে সেই স্বীকৃতির বাস্তব অনুশীলন করে না। তেমনি পুরুষ বহিঃ সমাজে অনেক বিড়ম্বনা সহ্য করে, পুরুষ বিভিন্ন কলা-কৌশলে উপার্জন বৃদ্ধির অনবদ্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নারী অল্পতেই তাদের সন্দেহের চোখে দেখে।
পিকেএসএফ পরিক্রমা: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। আপনার সুস্বাস্থ্য ও সাফল্য কামনা করছি।
অধ্যাপিকা ড. হোসনে-আরা বেগম: আপনাকেসহ পিকেএসএফ-কে অনেক অনেক ধন্যবাদ।