উপকূলীয় ২৫০ পরিবারের জন্য সুপেয় পানির সুব্যবস্থা করল পিকেএসএফ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
উপকূলীয় ২৫০ পরিবারের জন্য সুপেয় পানির সুব্যবস্থা করল পিকেএসএফ
২৭ জুলাই ২০২২, বুধবার
শের-ই-বাংলা নগর, ঢাকা
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার আজ (বুধবার, ২৭ জুলাই ২০২২) খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার আমাদী ইউনিয়নের ঋষি পাড়ায় একটি রিভার্স অসমোসিস প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেন। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দেশের শীর্ষ উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহযোগিতায় এই সুপেয় পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়।
জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি ও লবণাক্ততার ফলে উপকূলীয় এলাকার মানুষ সুপেয় পানির তীব্র সঙ্কটে ভুগছেন। উপকূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির অভিগম্যতা নিশ্চিতকরণে বাগেরহাট, বরগুনা, খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী ও পিরোজপুর জেলায় পিকেএসএফ এ পর্যন্ত ৭০টি পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে। পিকেএসএফ-এর সহায়তায় স্থাপিত এসব সুপেয় পানির প্ল্যান্টের বিশেষ বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, প্ল্যান্টগুলোতে ভূগর্ভস্থ পানির পরিবর্তে ভূপৃষ্ঠের উন্মুক্ত উৎস থেকে পানি সংগ্রহ করা হয়।
পানির প্ল্যান্টটি উদ্বোধনকালে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার বলেন, “বাংলাদেশ-সহ বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ নিরাপদ পানির অভাবের মধ্যে বসবাস করছেন। মানুষের সুস্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ পানির অভাব পূরণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।” খুলনার এই সাংসদ দেশের সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যেন দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার পানির সঙ্কটকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় এবং স্বল্পমেয়াদ ও দীর্ঘমেয়াদে সঙ্কট সমাধানে উপযুক্ত পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসে সে আহ্বান জানান।
পিকেএসএফ-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. নমিতা হালদার, এনডিসি, সুপেয় পানি নিশ্চিতকরণে পিকেএসএফ-এর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, “নিরাপদ সুপেয় পানি মানুষের জীবন বাঁচায়, রোগ প্রতিরোধ করে এবং বিভিন্ন সমস্যাকে সম্ভাবনায় রূপ দেয়। শারীরিক সুস্থতা মানুষের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন ও কর্মজীবনের জন্য খুবই প্রয়োজন। আর এ কারণেই সুপেয় পানির অভাব রয়েছে এমন কমিউনিটিতে নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণকে পিকেএসএফ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। পিকেএসএফ এর উন্নয়ন পরিকল্পনায় নিরাপদ পানি নিশ্চিতকরণের বিষয়টি তাই বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে।”
বুধবার উদ্বোধন হওয়া পানির প্ল্যান্টটি থেকে ঘন্টায় ১,০০০ লিটার সুপেয় পানি উৎপাদিত হবে, যা থেকে দৈনিক ২৫০টি পরিবারের প্রতিদিনের পানির অভাব পূরণ সম্ভব হবে। ইউনিসেফ-এর তথ্য অনুসারে, সবার জন্য খাবার পানি নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ প্রভূত অগ্রগতি অর্জন করেছে। দেশের ৯৭% মানুষের খাবার পানির সংস্থান রয়েছে। তবে, নিরাপদ সুপেয় পানির অভিগম্যতা রয়েছে মাত্র শতকরা ৩৪.৬ ভাগ মানুষের।
সমুদ্রের পানির উচ্চতা বৃদ্ধি, ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়া, নদীর জোয়ার-ভাটার পরিবর্তন, ঘনঘন সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে নিরাপদ পানির অভাব দিন দিন আরও বেড়ে যাচ্ছে। ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- বন্যা, সাইক্লোন ও জলোচ্ছ্বাসের কারণে খাবার পানির বিভিন্ন উৎস দূষিত হচ্ছে। এই সংকটের নির্মম বৈষম্যের শিকার দেশের নারী ও মেয়ে শিশুরা যারা ঐতিহ্যগতভাবে সুপেয় পানি সংগ্রহের ভার বহন করে থাকে। সঙ্কটপীড়িত অঞ্চলে সুপেয় পানির অভাব পূরণে পিকেএসএফ এ যাবৎ ৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯টি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে বৃষ্টির পানি সংরক্ষণে পানির ট্যাংক বিতরণ, রিভার্স অসমোসিস প্ল্যান্ট স্থাপন, প্রাকৃতিক দুর্যোগকালে নিরাপদ সুপেয় পানি বিতরণ এবং পাহাড়ি এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গভীর ও অগভীর নলকূপ ও সাপ্লাই পাইপলাইন স্থাপন উল্লেখযোগ্য।
বার্তা প্রেরক,
স্বাক্ষরিত/-
(মো: মাহফুজুল ইসলাম শামীম)
উপ-মহাব্যবস্থাপক, পিকেএসএফ
প্রয়োজনে যোগাযোগ: সুহাস শংকর চৌধুরী, ব্যবস্থাপক (যোগাযোগ ও প্রকাশনা), ফোন: ০১৭১১-৫৯৬৪৫০; ইমেইল: suhas.pksf@gmail.com